ঢাকা, বাংলাদেশ ২৪ মে, ২০২৫

জিআই পণ্যের স্বীকৃতি পেল শেরপুরের ছানার পায়েস

জিআই পণ্যের স্বীকৃতি পেল শেরপুরের ছানার পায়েস

সংগৃহীত

Publish : 01:22 AM, 08 December 2024.
শেরপুর প্রতিনিধি :

শেরপুরে তুলশীমালা চালের পর এবার ভৌগলিক নির্দেশক বা জিআই পণ্যের স্বীকৃতি পেল ঐতিহ্যবাহী ছানার পায়েস। 

বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) শেরপুর জেলা প্রশাসক তরফদার মাহমুদুর রহমান এ কথা জানান। পরে শহরজুড়ে আনন্দ ছড়িয়ে পড়ে।

এ উপলক্ষ্যে সাধারণ মানুষের মাঝে ছানার পায়েস বিতরণ করেছে জেলা ব্র্যান্ডিং ওয়েবসাইট ‘আওয়ার শেরপুর’। এই ওয়েবসাইটের প্রতিষ্ঠাতা ও স্বত্বাধিকারী মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘ছানার পায়েস শেরপুরের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির অংশ। জিআই পণ্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হওয়ায় আমরা আনন্দিত। এটি শেরপুরের ব্র্যান্ডিং ও ঐতিহ্য আরও বহুদূর নিয়ে যাবে।’

তিনি জানান, শেরপুরের ছানার পায়েস সারা দেশে বিখ্যাত। এর জিআই স্বীকৃতি চেয়ে শিল্প মন্ত্রণালয়ের পেটেন্ট, শিল্প-নকশা ও ট্রেড মার্কস অধিদপ্তর (ডিপিডিটি) বরাবর আবেদন করেছে জেলা প্রশাসন শেরপুর। সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে জিআই স্বীকৃতি পেয়েছে ৫ ডিসেম্বর। ডিপিডিটির মহাপরিচালক মুনিম চৌধুরী স্বাক্ষরিত সনদের মাধ্যমে এই স্বীকৃতির কথা জানানো হয়। এতে শেরপুরের সর্বস্তরের মানুষ আনন্দিত। 

ছানার পায়েস কীভাবে বানানো হয়, সেটি জানালেন শেরপুর শহরের গোয়ালপট্টি মহল্লার দুর্গাচরণ মিষ্টান্ন ভান্ডারের কারিগর রিপন চন্দ্র ভদ্র। তিনি বলেন, ছানার পায়েস তৈরি করতে দুধ, চিনি, ময়দা ও এলাচ লাগে। প্রথমে দুধ জ্বাল দিয়ে ক্ষির করা হয়। এরপর আলাদাভাবে দুধ থেকে ছানা কেটে তাতে সামান্য ময়দা মিশিয়ে ছোট ছোট গুটি করা হয়। এই গুটি চিনিমিশ্রিত শিরায় ভিজিয়ে আগে তৈরি করা ক্ষিরে ছেড়ে হাল্কা আঁচে জ্বাল দেওয়া হয়। এভাবেই তৈরি হয় সুস্বাদু এই মিষ্টি। এক কেজি ছানার পায়েস তৈরি করার জন্য দুই কেজি দুধ, আধা কেজি চিনি, সামান্য পরিমাণ ময়দা ও ১০ থেকে ১৫ গ্রাম এলাচ লাগে।

শেরপুর শহরের রঘুনাথ বাজার মহল্লার অনুরাধা মিষ্টান্ন ভান্ডারের স্বত্বাধিকারী বাপ্পি দে জানান, শেরপুরের প্রশাসন, সাংবাদিক, সুধি মহল থেকে শুরু করে সর্ব মহলের সহযোগিতায় শেরপুরে তুলশীমালা চালের পর দ্বিতীয় জিআই পণ্য হিসেবে ঐতিহ্যবাহী ছানার পায়েস। এর মধ্য দিয়ে শেরপুরের অর্থনৈতিক খাত চাঙা হওয়ার পাশাপাশি দেশ ও দেশের বাইরে শেরপুরের সুনাম ছড়িয়ে পড়বে।

জেলা প্রশাসক সাংবাদিকদের বলেন, ‘দেশের ৪৪তম জিআই পণ্যের মর্যাদা অর্জন করেছে শেরপুরের ছানার পায়েস। আমরা সনদের কপি হাতে পেয়েছি। জিআই পণ্য হওয়ার কারণে তা সারা দেশে ছড়িয়ে যাবে।’ তিনি আরো বলেন, শেরপুরের সম্ভাবনাময় অন্যান্য সব পণ্যের জিআই স্বীকৃতি চেয়ে প্রস্তাব করা হবে শিগগিরই।

শেরপুরের ছানার পায়েসের ঐতিহ্য শত বছরের পুরোনো। ব্রিটিশ আমলে এই মিষ্টি প্রথম তৈরি হয় শেরপুরের গোয়ালপট্টিতে। তখন হাতেগোনা দু-একটি দোকানে এই মিষ্টি তৈরি হতো। এখন জেলা সদরেই অন্তত ২০টি দোকানে ছানার পায়েস হচ্ছে। এসব দোকানে প্রতিদিন গড়ে বিক্রি হয় প্রায় ২০০ থেকে ৩০০ কেজি ছানার পায়েস। শেরপুর শহরের বিভিন্ন মিষ্টির দোকানে প্রতি কেজি ছানার পায়েস প্রকারভেদে ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকায় বিক্রি হয়। জেলার ঝিনাইগাতী, শ্রীবরদী, নকলা ও নালিতাবাড়ী উপজেলাতেও পাওয়া যায় এই মিষ্টি। এই ছানার পায়েস জেলা এবং জেলার বাইরের বিভিন্ন আত্মীয়-স্বজনদের বাসায় বেড়াতে গেলে অথবা বিয়ে, জন্মদিন, ঈদুল ফিতর, ঈদুল আজহা, দুর্গাপূজাসহ বিভিন্ন ধর্মীয় উৎসব ও যে কোনো অনুষ্ঠানে আপ্যায়নের জন্য শেরপুরের মানুষের কাছে পছন্দের। 

পিপলনিউজ/আরইউ

-- বিজ্ঞাপন --
CONTACT
[email protected]

বাংলাদেশ বিভাগের অন্যান্য খবর

Follow Us

ভারপ্রাপ্ত প্রকাশক, আরিফুর রহমান কর্তৃক
ডা. নওয়াব আলী টাওয়ার, ২৪ পুরানা পল্টন, ঢাকা থেকে প্রকাশিত।
ফোনঃ +৮৮ ০১৭৩২ ৪১৭ ৫১৭
Email: [email protected]

©২০২৪ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত || VOD Bangla.com

Develop by _ DigitalSolutions.Ltd