ঢাকা, বাংলাদেশ ২৪ মে, ২০২৫

সাহিত্যে নোবেল পেলেন দক্ষিণ কোরিয়ার লেখক হান কাং

সাহিত্যে নোবেল পেলেন দক্ষিণ কোরিয়ার লেখক হান কাং

সংগৃহীত

Publish : 05:52 AM, 14 October 2024.
নিজস্ব প্রতিবেদক :

এ বছর সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন দক্ষিণ কোরিয়ার লেখক হান কাং। সাহিত্যে বিশ্বের সবচেয়ে মর্যাদাবান এ পুরস্কারের জন্য তাকে মনোনীত করার কারণ হিসেবে নোবেল কমিটি বলেছে, হান কাংয়ের গদ্য তীক্ষ্ণ ও কাব্যময়। তাতে ইতিহাসের যন্ত্রণাবিদ্ধ বিষয়ের সঙ্গে মুখোমুখি হয়ে বোঝাপড়ার প্রচেষ্টা আছে। তার গদ্যে আছে মানবজীবনের ভঙ্গুরতার কথাও।

৫৩ বছর বয়সী হান কাংয়ের লেখক হিসেবে আত্মপ্রকাশ ঘটেছিল দক্ষিণ কোরিয়ার একটি সাময়িকীতে একগুচ্ছ কবিতা প্রকাশের মাধ্যমে। ১৯৯৫ সালে তার একটি ছোটগল্প সংকলন বের হয়। আর সেটির মধ্য দিয়েই তার গদ্য পাঠকের সামনে আসে।

পরে হান কাং দীর্ঘাকার গদ্য লিখতে শুরু করেন। ‘দ্য ভেজেটারিয়ান’ তার সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বইয়ের একটি। ২০০৭ সালে প্রকাশিত এই উপন্যাসের জন্য ২০১৬ সালে ম্যান বুকার পুরস্কার পেয়েছিলেন তিনি। এ উপন্যাসে হান কাং মানুষের নিষ্ঠুরতায় আতঙ্কিত এক তরুণীর ‘বৃক্ষের মতো’ বেঁচে থাকার লড়াইয়ের কথা তুলে ধরেন।

বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) সাহিত্যে নোবেল বিজয়ী ১২১তম লেখক হিসেবে হান কাংয়ের নাম ঘোষণা করে রয়্যাল সুইডিশ অ্যাকাডেমি। নোবেল পুরস্কার কমিটি ১৯০১ সাল থেকে সাহিত্যে পুরস্কার দিয়ে আসছে। হান কাংকে নিয়ে ১৮তম বারের মতো একজন নারী পুরস্কারটি পেলেন। 

পুরস্কারের অর্থমূল্য হিসেবে এক কোটি ১০ লাখ সুইডিশ ক্রোনার পাবেন হান। গত বছর এ সম্মাননা পেয়েছিলেন নরওয়ের লেখক, নাট্যকার ও কবি ইয়ন ফোসে।

হান কাং দক্ষিণ কোরিয়ার দ্বিতীয় এবং সাহিত্যে দেশটির প্রথম ব্যক্তি হিসেবে মর্যাদাপূর্ণ এই পুরস্কার পেলেন। এর আগে ২০০০ সালে সাবেক প্রেসিডেন্ট কিম দে-জুং শান্তিতে নোবেল পান। নোবেল পুরস্কার বোর্ড তার পরিচিতি দিতে গিয়ে বলেছে, তিনি এমন একজন যিনি সঙ্গীত ও শিল্পকলার জন্য নিজেকে উৎসর্গ করেছেন।

নোবেল কমিটি আরো বলেছে, মানুষের জীবনের নানা দিক নিয়ে এগিয়েছে হান কংয়ের অনুসন্ধিৎসু মন। তাই তার কাজকে কোনো সীমানায় আটকে ফেলা যায় না। সহিংসতা, দুঃখ–কষ্ট ও পিতৃতন্ত্রের মতো নানা বিষয় উঠে এসেছে তার লেখায়।

প্রায় এক দশক আগে প্রকাশিত হলেও হান কাংয়ের উপন্যাস ‘দ্য ভেজেটারিয়ান’ ২০১৫ সালে ইংরেজিতে অনুবাদ করেন ডেবোরাহ স্মিথ। পরের বছরই উপন্যাসটি ম্যান বুকার পুরস্কার পেলে লেখক হিসেবে হান কাংয়ের জীবন পাল্টে যায়। 

সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার ঘোষণার অনুষ্ঠানে সুইডিশ অ্যাকাডেমির স্থায়ী সচিব ম্যাটস মাম বলেন, শরীরের সঙ্গে আত্মার, জীবিতের সঙ্গে মৃতের যোগাযোগ নিয়ে হান কাংয়ের সচেতনতা অসাধারণ। তার গদ্য কাব্যিক ও নিরীক্ষাময়। সমসাময়িক গদ্যসাহিত্যে তিনি একজন উদ্ভাবকের ভূমিকায় আবির্ভূত হয়েছেন।

১৯৭০ সালে দক্ষিণ কোরিয়ার হাংজু শহরের জন্ম হানের। তার বাবাও স্বনামধন্য ঔপন্যাসিক। ১৯৯৩ সালে ‘লিটারেচার অ্যান্ড সোসাইটি’ ম্যাগাজিনে বেশ কিছু কবিতা প্রকাশের মধ্য দিয়ে তার সাহিত্যের ক্যারিয়ার শুরু হয়। দুই বছর পর ১৯৯৫ সালে প্রকাশিত হয় ছোটগল্প সংকলন ‘লাভ অব ইউসু’। ‘দ্য ভেজিটেরিয়ান’ উপন্যাসের মাধ্যমে তিনি আন্তর্জাতিক খ্যাতি ও পরিচিতি পান।

তার অন্যান্য বইয়ের মধ্যে রয়েছে ‘দ্য উইন্ড ব্লোজ, গো’ (২০১০), হিউম্যান অ্যাক্টস (২০১৬), দ্য হোয়াইট বুক (২০২১৭), উই ডু নট পার্ট (২০২১), গ্রিক লেসনস (২০২৩) ও ছোটগল্প সংকলন ‘ইউরোপা’।

হানের নোবেল পাওয়ার খবরে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইয়ুন সক ইয়ায় ফেসবুক পোস্টে তাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন।

ইয়ুন সক লিখেছেন, ২০২৪ সালে সাহিত্যে নোবেল পাওয়ায় হান কাংকে অভিনন্দন। এটি দক্ষিণ কোরিয়ার সাহিত্যের ইতিহাসের জন্য বিরাট অর্জন। জাতীয় এই উপলক্ষ গোটা দেশ উদযাপন করবে।

বরাবরের মতোই চিকিৎসা বিভাগের পুরস্কার ঘোষণার মধ্য দিয়ে সোমবার চলতি বছরের নোবেল মৌসুম শুরু হয়। 

মঙ্গলবার ঘোষণা হয় পদার্থবিদ্যার নোবেল। এরপর বুধবার ঘোষণা করা হয় রসায়নের নোবেল। শুক্রবার শান্তি এবং আগামী ১৪ অক্টোবর অর্থনীতিতে এবারের নোবেল বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হবে। ১০ ডিসেম্বর আলফ্রেড নোবেলের মৃত্যুবার্ষিকীতে সুইডেনের স্টকহোমে অনুষ্ঠান আয়োজনের মাধ্যমে বিজয়ীদের হাতে তুলে দেওয়া হবে নোবেল পুরস্কার।

পিপলনিউজ/আরইউ

-- বিজ্ঞাপন --
CONTACT
[email protected]

শিল্প-সংস্কৃতি বিভাগের অন্যান্য খবর

Follow Us

ভারপ্রাপ্ত প্রকাশক, আরিফুর রহমান কর্তৃক
ডা. নওয়াব আলী টাওয়ার, ২৪ পুরানা পল্টন, ঢাকা থেকে প্রকাশিত।
ফোনঃ +৮৮ ০১৭৩২ ৪১৭ ৫১৭
Email: [email protected]

©২০২৪ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত || VOD Bangla.com

Develop by _ DigitalSolutions.Ltd