সংগৃহীত
বিদ্রোহে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের পতনের পর দেশটির অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধানমন্ত্রী হন মোহাম্মদ আল-বশির। তিনি মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) কাতারভিত্তিক আল-জাজিরা টেলিভিশনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, এখন দেশটিতে শান্তি-স্থিতিশীলতার সময়। দায়িত্ব নেওয়ার পর এটি তার প্রথম সাক্ষাৎকার।
এদিকে রাশিয়ার উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই রায়াবকভ গত মঙ্গলবার এবিসি নিউজকে এক সাক্ষাৎকারে জানান, বিদ্রোহীদের ত্বরিত অগ্রযাত্রার মুখে বাশার আল-আসাদকে খুবই সুরক্ষিত উপায়ে দামেস্ক থেকে সরিয়ে রাশিয়ায় আনা হয়েছে।
অন্যদিকে ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আরী খামেনি বুধবার (১১ ডিসেম্বর) জাতির উদ্দেশে ভাষণে বলেন, সিরিয়ায় যা ঘটেছে, তা আমেরিকান-ইহুদিবাদী যৌথ ষড়যন্ত্রের ফল।
এর মাঝে সিরিয়াজুড়ে দুই দিনে চালানো প্রায় ৪৮০টি বিমান হামলায় দেশটির কৌশলগত অস্ত্র মজুদের অধিকাংশই ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী।
বিদ্রোহীদের অভিযানে গত রবিবার বাশার আল-আসাদ সরকারের পতন হয়। আসাদের ক্ষমতাচ্যুতির দুই দিন পর আল-বশিরকে সিরিয়ার অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধানমন্ত্রী করা হয়। তিনি ২০২৫ সালের ১ মার্চ পর্যন্ত এই দায়িত্বে থাকবেন।
হায়াত তাহরির আল-শামের (এইচটিএস) নেতৃত্বে সিরিয়ার বিদ্রোহীরা গত ২৭ নভেম্বর বাশার আল-আসাদ সরকার উৎখাতে অভিযান শুরু করে।
বিদ্রোহীদের ১২ দিনের ঝটিকা অভিযানে রবিবার পতন হয় দুই যুগ ক্ষমতায় থাকা প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের।
বিদ্রোহীদের হাতে রাজধানী দামেস্কের পতন হয়। বাশার আল-আসাদ দেশ থেকে পালিয়ে যান। এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা মার্কিন সম্প্রচারমাধ্যম এনবিসিকে বলেন, বাশার আল-আসাদ এখন রাশিয়ার মস্কোয় আছেন।
এর মধ্য দিয়ে সিরিয়ায় বাশার আল-আসাদের ২৪ বছরের শাসনের অবসান ঘটে। বাবা হাফিজ আল-আসাদ ও ছেলে বাশার আল-আসাদ মিলে টানা ৫৪ বছর সিরিয়া শাসন করেছেন।
আগে থেকেই বাশার আল-আসাদের স্ত্রী-সন্তানেরা মস্কোয় অবস্থান করছিলেন। রাশিয়া জানিয়েছে, তাদের রাজনৈতিক আশ্রয় দেওয়া হয়েছে।
বাশার আল-আসাদের পতনের পর ক্ষমতা হস্তান্তরের বিষয়টি নিয়ে গত সোমবার বৈঠক করেন এইচটিএসের প্রধান আবু মোহাম্মদ আল-জুলানি, বাশার সরকারের প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ আল-জালালি ও আল-বশির। এর ধারাবাহিকতায় সরকার গঠনের প্রক্রিয়া শুরু হয়।
এইচটিএসের প্রধান আল-জুলানি সিরিয়ায় নির্যাতন, যুদ্ধাপরাধের জন্য দায়ী সাবেক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের বিচারের আওতায় আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
বাশার আল-আসাদ-পরবর্তী সিরিয়ার শাসন নিয়ে আশঙ্কা দূর করারও চেষ্টা করেছেন আল-জুলানি। তিনি মঙ্গলবার স্কাই নিউজকে বলেন, সিরিয়া যুদ্ধ করে করে ক্লান্ত। সিরিয়া আর যুদ্ধে ফিরে যাবে না।
আল-জুলানি বলেন, সিরিয়া পুনর্গঠন করা হবে। সিরিয়া উন্নয়ন ও পুনর্নির্মাণের পথে অগ্রসর হবে। সিরিয়া স্থিতিশীলতার পথে এগোবে। যুদ্ধের কারণে মানুষ ক্লান্ত। এই দেশ আরেকটি যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত নয়। তারা আরেকটি যুদ্ধে জড়াতে যাচ্ছেন না।
আসাদকে নিরাপদে দামেস্ক থেকে রাশিয়ায় নেওয়া হয়েছে
বিদ্রোহীদের রাজধানী দামেস্কে প্রবেশের মুখে রাশিয়ায় রাজনৈতিক আশ্রয় নিয়েছেন সিরিয়ার শাসক বাশার আ-–আসাদ। এখন রাশিয়া জানিয়েছে, বাশার আল-আসাদকে তারাই নিরাপদে দামেস্ক থেকে সরিয়ে নিয়ে এসেছে।
রাশিয়ার উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই রায়াবকভ বলেন, তিনি (বাশার আল-আসাদ) সুরক্ষিত ছিলেন। এর অর্থ হলো, এমন বিস্ময়কর পরিস্থিতিতে রাশিয়া প্রয়োজন অনুযায়ী ভূমিকা রাখে।
প্রশ্ন করা হয়েছিল, বাশার আল-আসাদকে এখন বিচারের জন্য ফেরত দেওয়া হবে কিনা? জবাবে রুশ উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী সরাসরি বলেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের এ-সংক্রান্ত সনদের অংশীজন নয় রাশিয়া।
সিরিয়ার ঘটনা আমেরিকান-ইহুদিবাদী যৌথ ষড়যন্ত্রের ফল: আলী খামেনি
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি বলেছেন, সিরিয়ায় যা ঘটেছে, তা আমেরিকান-ইহুদিবাদী যৌথ ষড়যন্ত্রের ফল। এতে কোনো সন্দেহ থাকা উচিত নয়।
বুধবার দেশের বিভিন্ন স্তরের হাজার হাজারো সামনে দেওয়া এক ভাষণে তিনি বলেন, প্রতিবেশী একটি দেশ এই ঘটনায় দৃশ্যমান ভূমিকা পালন করলেও মূল ষড়যন্ত্রকারী ও কৌশলবিদরা যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলে অবস্থান করছে।
আলী খামেনি দেশটির নাম উল্লেখ না করলেও আসাদবিরোধী বিদ্রোহীদের সমর্থন দেওয়া তুরস্কের প্রতি ইঙ্গিত করেছেন বলে মনে হচ্ছে।
তিনি বলেন, হ্যাঁ, সিরিয়ার একটি প্রতিবেশী রাষ্ট্র স্পষ্টতই এই বিষয়ে ভূমিকা পালন করেছে এবং তা অব্যাহত রেখেছে- সবাই এটি দেখতে পাচ্ছে। কিন্তু মূল ষড়যন্ত্রকারী, মূল পরিকল্পনাকারী ও কমান্ড সেন্টার আমেরিকা ও ইহুদিবাদী সরকারের মধ্যেই নিহিত। আমাদের কাছে এমন ইঙ্গিত রয়েছে, যা এই উপসংহারে সন্দেহের কোনো অবকাশ রাখে না।
তিনি প্রতিরোধ ফ্রন্টের ভবিষ্যত সম্পর্কে আশ্বস্ত করে বলেন, আল্লাহর কৃপায় প্রতিরোধের পরিধি পুরো অঞ্চলকে আগের চেয়ে আরও বেশি ঘিরে ফেলবে।
তিনি আরো বলেন, রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট এমনই, আপনি যত বেশি চাপ প্রয়োগ করবেন, এটি তত শক্তিশালী হয়ে উঠবে। আপনি যত বেশি অপরাধ করবেন, তত বেশি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে উঠবে। আপনি যত বেশি তাদের সঙ্গে লড়াই করবেন, ততই এটি আরো প্রসারিত হবে।
সাম্প্রতিক ঘটনাবলীর ফলে ইরান দুর্বল হয়ে পড়বে বলে যেসব বিশ্লেষক যুক্তি দেখাচ্ছেন, তাদের ‘অজ্ঞ’ বলে উড়িয়ে দিয়েছেন আলি খামেনি। তিনি বলেন, আল্লাহর রহমতে ইরান শক্তিশালী ও শক্তিশালী এবং আরো শক্তিশালী হবে।
সর্বোচ্চ নেতা সিরিয়ার ভবিষ্যতের ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, আল্লাহর রহমতে সিরিয়ার দখলকৃত অঞ্চলগুলো সিরিয়ার সাহসী তরুণদের হাত ধরে মুক্ত করা হবে। সন্দেহ নেই যে এটি ঘটবে। রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট যুক্তরাষ্ট্রকেও ওই অঞ্চল থেকে বিতাড়িত করবে।
তিনি সিরিয়ার সংঘাতে জড়িতদের ভিন্ন ভিন্ন উদ্দেশ্য তুলে ধরে বলেন, কেউ কেউ উত্তর বা দক্ষিণ সিরিয়ায় আঞ্চলিক দখলদারিত্ব চায়। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের লক্ষ্য এই অঞ্চলে তার অবস্থান সুরক্ষিত করা। এগুলো তাদের লক্ষ্য, কিন্তু সময় প্রমাণ করবে যে ইনশাআল্লাহ, এগুলোর কোনোটিই অর্জিত হবে না।
তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র এ অঞ্চলে পা রাখতে পারবে না এবং প্রতিরোধ ফ্রন্ট তাদের ওই অঞ্চল থেকে বিতাড়িত করবে।
সিরিয়ার কৌশলগত অস্ত্রের মজুদ ধ্বংসের দাবি ইসরায়েলের
সিরিয়াজুড়ে দুই দিনে চালানো প্রায় ৪৮০টি বিমান হামলায় দেশটির কৌশলগত অস্ত্র মজুদের অধিকাংশই ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী।
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ মঙ্গলবার বলেছেন, ইসরায়েলের লক্ষ্য সিরিয়ার দক্ষিণাঞ্চলে একটি শত্রুমুক্ত প্রতিরক্ষা জোন বসানো যা স্থায়ী সেনা উপস্থিতি ছাড়াই বলবৎ থাকবে।
বাশার সরকারের পতন হওয়ার পর ইসরায়েলি জঙ্গি বিমানগুলো পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে সিরিয়াজুড়ে হামলার ঢেউ বইয়ে দেয়। সিরিয়ার বিমান বিধ্বংসী ব্যাটারি, সামরিক বিমানক্ষেত্র, অস্ত্র উৎপাদন কারখানা, যুদ্ধবিমান ও ক্ষেপণাস্ত্র লক্ষ্য করে এসব হামলা চালানো হয় বলে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী জানিয়েছে।
এর পাশাপাশি সোমবার রাতে জাহাজ থেকে ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ে সিরিয়ার আল বায়দা বন্দর ও লাতাকিয়া বন্দরে সিরিয়ার নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজগুলোতে আঘাত হানে ইসরায়েল। এ সময় ওই দুই বন্দরে সিরিয়ার নৌবাহিনীর ১৫টি জাহাজ নোঙর করা ছিল।
ইসরায়েলি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সিরিয়াজুড়ে চালানো এসব হামলার লক্ষ্য ছিল দেশটির কৌশলগত অস্ত্র ও সামরিক অবকাঠামোগুলো ধ্বংস করা, যেন আসাদকে ক্ষমতাচ্যুত করা বিদ্রোহীরা সেগুলো ব্যবহার করতে না পারে। এই বিদ্রোহীদের কিছু অংশের উৎপত্তি আল কায়েদা ও ইসলামিক স্টেটের (আইএস) মতো গোষ্ঠীগুলোর তৎপরতা থেকে হয়েছে।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, সিরিয়ার অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করার উদ্দেশ্য নেই তাদের, কিন্তু নিজেদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে যা করা দরকার তাই করছেন তারা।
তিনি বলেন, সিরিয়ার সেনাবাহিনীর রেখে যাওয়া কৌশলগত সামরিক সামর্থ্যে বোমাবর্ষণ করতে বিমান বাহিনীকে অনুমোদন দিয়েছি আমি, যেন সেগুলো জিহাদিদের হাতে গিয়ে না পড়ে।
আসাদ বিমানযোগে পালিয়ে যাওয়ার পর ইসরায়েলি সেনারা ১৯৭৩ সালের আরব-ইসরায়েল যুদ্ধের পর সিরিয়ার ভেতরে তৈরি করা অসামরিক এলাকায় ঢুকে পড়ে। তারা সিরিয়ার কৌশলগভাবে গুরুত্বপূর্ণ পর্বত মাউন্ট হেরমনে সিরিয়ার একটি সামরিক পোস্ট দখল করে নেয়। মাউন্ট হেরমন থেকে পুরো দামেস্ক দেখা যায়।
ইসরায়েলের সামরিক মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট কর্নেল নাদভ শোশানি দাবি করেছেন, তাদের সেনারা ইসরায়েল-সিরিয়ার মধ্যবর্তী বাফার জোনেই আছে, তবে তারা এর কাছাকাছি কয়েকটি অতিরিক্ত পয়েন্টেও অবস্থান নিয়েছে।
সিরিয়ার এক কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানিয়েছিলেন, ইসরায়েলি বাহিনী বাফার জোন ছেড়ে সিরিয়ার আরো ভেতরে ঢুকে পড়ে কাতানা শহরে উপস্থিত হয়েছে, যা বাফার জোন থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার ভেতরে এবং দামেস্ক বিমানবন্দর থেকে অল্প গাড়ি দূরত্বে অবস্থিত।
কিন্তু ইসরায়েলি বাহিনী বাফার জোন ছেড়ে সিরিয়ার অনেকটা ভেতরে ঢুকে পড়েছে বলে যে অভিযোগ এসেছে শোশানি তা প্রত্যাখ্যান করেছেন। ইসরায়েলি সেনারা দামেস্কের দিকে অগ্রসর হচ্ছে না বলে দাবি করেছেন তিনি।
সিরিয়ার এইচটিএসের প্রতি অন্তর্ভুক্তিমূলক সরকারের আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের
সিরিয়ার বিদ্রোহী জোটের নেতৃত্ব দেওয়া গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল-শামকে (এইচটিএস) সরাসরি দেশটির নেতৃত্ব গ্রহণ না করে তার বদলে অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রক্রিয়া পরিচালনার মাধ্যমে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
এইচটিএসের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম যোগাযোগের বিষয়ে অবহিত করে এসব কথা জানান বাইডেন প্রশাসনের দুই কর্মকর্তা ও মার্কিন কংগ্রেসের এক সহযোগী।
রয়টার্স জানায়, তুরস্কসহ যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যপ্রাচ্যের মিত্রদের মধ্যস্থতায় ওয়াশিংটনের সঙ্গে এইচটিএসের যোগাযোগ হয়। এই হায়াত তাহরির আল-শাম গোষ্ঠীটি আগে আল কায়েদার সঙ্গে জোটবদ্ধ ছিল আর একে যুক্তরাষ্ট্র সন্ত্রাসী সংগঠনের তকমা দিয়ে রেখেছে।
ওই মার্কিন কর্মকর্তাদের মধ্যে একজন জানান, এই যোগাযোগের বিষয়ে বাইডেন প্রশাসন নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের টিমকেও সবকিছু জানাচ্ছে।
গত কয়েকদিন ধরে এইচটিএসের সঙ্গে ওয়াশিংটনের আলোচনা হয়েছে। হঠাৎ করে আসাদের পতন হওয়ায় সিরিয়ায় যে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে তার মধ্যে দেশটির বিভিন্ন গোষ্ঠীর সঙ্গে সমন্বয় করার বড় ধরনের প্রচেষ্টা শুরু করছে ওয়াশিংটন। এইচটিএসের সঙ্গে আলোচনা সেই প্রচেষ্টারই অংশ।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এই মার্কিন কর্মকর্তা জানান, গোষ্ঠীটিকে সিরিয়ার জন্য একটি আনুষ্ঠানিক শাসন কাঠামো প্রতিষ্ঠার প্রাথমিক প্রচেষ্টায় পথ দেখিয়ে সহায়তা করার বার্তা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। তবে এসব বার্তা সরাসরি দেওয়া হয়েছে না মধ্যবর্তী কারও মাধ্যমে দেওয়া হয়েছে তা জানাতে রাজি হননি তিনি।
এই কর্মকর্তা জানান, আন্তর্বর্তী সরকারকে সিরিয়ার জনগণের আকাক্সক্ষার প্রতিনিধিত্ব করা উচিত বলে ওয়াশিংটন বিশ্বাস করে এবং আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে নতুন নেতা বেছে নেওয়া ছাড়াই এইচটিএসের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেওয়াকে সমর্থন করবে না।
রয়টার্স জানায়, এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিল কোনো মন্তব্য কতে রাজি হয়নি।
যুক্তরাষ্ট্র ২০১৩ সালে এইচটিএসের নেতা আহমেদ আল-শারাকে (আবু মোহাম্মদ আল-জুলানি নামেই বেশি পরিচিত) সন্ত্রাসীর তকমা দেয়। তারা বলেছিল, ইরাকের আল কায়েদা আসাদকে ক্ষমতা থেকে উচ্ছেদের জন্য শারাকে দায়িত্ব দিয়ে সিরিয়ায় ইসলামিক শরিয়া আইন প্রতিষ্ঠা করতে বলেছিল। এইচটিএসের পূর্বসূরী নুসরা ফ্রন্ট সিরিয়াজুড়ে আত্মঘাতী হামলা চালিয়ে বেসামরিকদের হত্যা করেছিল এবং সহিংস সাম্প্রদায়িক দৃষ্টিভঙ্গী পোষণ করতো।
ওই কর্মকর্তা জানান, ভবিষ্যৎ সিরিয়া সরকারে জুলানির ভূমিকা কী হবে এবং তিনি এখনও চরমপন্থি মতাদর্শ পোষণ করেন কিনা বাইডেন প্রশাসনের এ বিষয়ে পরিষ্কার ধারণা নেই।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন সিরিয়ার রাজনৈতিক পরিবর্তনের বিষয়ে মঙ্গলবার বলেন, ওয়াশিংটন সিরিয়ার সেই ভবিষ্যৎ সরকারকে স্বীকৃতি দেবে যারা বিশ্বাসযোগ্য, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও অসাম্প্রদায়িক শাসক হবে।
পিপলনিউজ/আরইউ
ভারপ্রাপ্ত প্রকাশক, আরিফুর রহমান কর্তৃক
ডা. নওয়াব আলী টাওয়ার, ২৪ পুরানা পল্টন, ঢাকা থেকে প্রকাশিত।
ফোনঃ +৮৮ ০১৭৩২ ৪১৭ ৫১৭
Email: [email protected]
©২০২৪ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত || VOD Bangla.com