ঢাকা, বাংলাদেশ ২৪ মে, ২০২৫

‘সারপ্রাইজ গিফট’ হিসেবে ‘ম্যাজিক মাশরুম’ মাদক আনেন যুবক

‘সারপ্রাইজ গিফট’ হিসেবে ‘ম্যাজিক মাশরুম’ মাদক আনেন যুবক

সংগৃহীত

Publish : 12:45 AM, 09 December 2024.
পিপলনিউজ ডেস্ক :

মালয়েশিয়ায় এ লেভেল এবং ও লেভেল সম্পন্ন করেন বাংলাদেশি তরুণ কাজী মারুফুল ইসলাম রাজ। এর পর তিনি ইংল্যান্ডে যান ‘ব্যারিস্টার অ্যাট ল’ পড়তে। তবে পড়া শেষ না করেই চলতি বছর দেশে ফিরে আসেন তিনি। বিদেশে থাকতেই তিনি ম্যাজিক মাশরুম ও টেট্রাহাইড্রো ক্যানাবিনলযুক্ত (টিএইচসি) মাদক কুশের সঙ্গে পরিচিত হন। দেশে ফেরার পর এসব মাদক আমদানি ও বিক্রি শুরু করেন তিনি।

সম্প্রতি তার একটি মাদকের চালান জব্দ করে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর (ডিএনসি)। চালানটি আনা হয় তার এক বন্ধুর নামে। যদিও সেই বন্ধু জানতেন, বিদেশ থেকে তার জন্য ‘সারপ্রাইজ গিফট’ আসছে। উপহারের নামে বাক্সে যে মাদক আনা হয়েছে, সেটি তিনি জানতেন না বলে দাবি করেছেন।

ডিএনসি ঢাকা মহানগর উত্তরের উপপরিচালক শামীম আহম্মেদ জানান, ডাক বিভাগের মাধ্যমে থাইল্যান্ড ও কানাডা থেকে আনা হয় মাদকের চালান। দেশে কম প্রচলিত এই মাদক মূলত অভিজাত শ্রেণির তরুণ-যুবকদের মধ্যে জনপ্রিয়। এবারের অভিযানে জব্দ মাদকের মধ্যে রয়েছে- এক কেজি ৪০ গ্রাম কুশ, ৬০ গ্রাম টিএইচসিযুক্ত ক্যান্ডি, ৩৮ গ্রাম তরল ক্যানাবিনয়েডস, ১৮ গ্রাম ম্যাজিক মাশরুম, সাড়ে ৮ লিটার বিভিন্ন ব্র্যান্ডের বিদেশি মদ এবং মাদক বিক্রির এক লাখ পাঁচ হাজার টাকা।

গ্রেপ্তাররা হলেন– কাজী মারুফুল ইসলাম রাজ, তার সহকারী ইসমাইল বেপারী এবং দেশের একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সাকিব নঈম।

ডিএনসি সূত্র জানায়, ধনাঢ্য পরিবারের সন্তান রাজ। তার মা যুক্তরাষ্ট্র এবং বাবা দুবাইয়ে থাকেন। তাদের মধ্যে বিচ্ছেদ হয়েছে। এ কারণে ইংল্যান্ডে লেখাপড়ার খরচ চালাতে গিয়ে রাজ সমস্যায় পড়েন। সেখানে তিনি পড়ালেখার পাশাপাশি কিছু কাজ করার চেষ্টা চালান। এক পর্যায়ে পড়ালেখা ছেড়ে দেশে ফিরে আসেন। এখানে দেখতে পান, বন্ধুদের অনেকেই কুশ ও ম্যাজিক মাশরুমের মতো মাদকে আসক্ত। তিনি নিজেও বন্ধুদের সঙ্গে মাঝেমধ্যে সেবন করেন। এরপর এসব মাদক আমদানির উপায় খুঁজতে থাকেন। এক পর্যায়ে থাইল্যান্ডে বেড়াতে গিয়ে এর নেটওয়ার্কের খোঁজ পান। তখনই তিনি সব ব্যবস্থা করেন। এর পর ডাক বিভাগের বৈদেশিক শাখার মাধ্যমে তার কাছে আসতে থাকে মাদকের চালান। গুলশানে মায়ের ফ্ল্যাটে থাকেন রাজ। সেখানেই মজুত করেন এসব মাদক। মোবাইল ফোনের বিভিন্ন সুরক্ষিত অ্যাপের মাধ্যমে ক্রেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ হতো। পরে কৌশলে তাদের কাছে মাদক পৌঁছে দেওয়া হতো।

অভিযানে নেতৃত্ব দেওয়া ডিএনসি উত্তরের সহকারী পরিচালক রাহুল সেন বলেন, চালানটি জব্দের পর সেটির প্রাপকের ফোন নম্বরের সূত্র ধরে ৪ ডিসেম্বর সাকিব নঈমকে গ্রেপ্তার করা হয়। তবে তিনি জানান, তার বন্ধু রাজ একটি উপহার পাঠানোর নাম করে ঠিকানা নিয়েছিল। কিন্তু পার্সেলের ভেতর কী আছে, তিনি জানেন না। এর পর রাজকে গ্রেপ্তার করা হলে তিনি মাদক আমদানির কথা স্বীকার করেন। নিজের নামে না এনে তিনি বন্ধু সাকিব ও সহকারী ইসমাইলের নামে চালান আনতেন। তার দাবি, অল্প দিন আগে তিনি মাদক কারবার শুরু করেছেন। এর আগে মাত্র একটি চালান এনেছিলেন। সেই চালানের কিছু নমুনাও তার বাসায় পাওয়া গেছে।

ডিএনসির এক কর্মকর্তা জানান, বছরখানেক আগে কুশের কয়েকটি চালান ধরা পড়ে। তবে এর পর এই মাদকের আর খোঁজ মেলেনি। সর্বশেষ মাসখানেক আগে একটি চক্র ধরা পড়ে। এর মাধ্যমে জানা যায়, আরো বেশ কয়েকটি চক্র সক্রিয় আছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ম্যাজিক মাশরুম মূলত এক ধরনের ব্যাঙের ছাতা। সাইলোসাইবিন নামে এ মাশরুম প্রকৃতিতেই জন্মায় এবং এটি খুবই বিষাক্ত। সাইলোসাইবিন শরীরে প্রবেশের পর এর মধ্যে যে উপাদানগুলো সক্রিয়, সেগুলো কাজ শুরু করে। এ উপাদান শরীরে বেশি প্রবেশ করলে নেশার উদ্রেক হয়। আর প্রচলিত গাঁজার সঙ্গে অতিরিক্ত টিএইচসি যুক্ত করে বানানো হয় কুশ বা এ জাতীয় মাদক।

পিপলনিউজ/আরইউ

-- বিজ্ঞাপন --
CONTACT
[email protected]

আইন-আদালত বিভাগের অন্যান্য খবর

Follow Us

ভারপ্রাপ্ত প্রকাশক, আরিফুর রহমান কর্তৃক
ডা. নওয়াব আলী টাওয়ার, ২৪ পুরানা পল্টন, ঢাকা থেকে প্রকাশিত।
ফোনঃ +৮৮ ০১৭৩২ ৪১৭ ৫১৭
Email: [email protected]

©২০২৪ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত || VOD Bangla.com

Develop by _ DigitalSolutions.Ltd